আপনি শারীরিকভাবে ফিট কিনা বলবে এ পাঁচটি নির্দেশক। শারীরিকভাবে সুস্থ বা নিরব থাকা মানেই ফিট থাকা নয়। শারীরিক ফিট নিচে ধারণাটা আরো ব্যাপক।
আপনি কি নিজেকে শারীরিকভাবে ফিট ভাবেন?
আপনি কি শারীরিকভাবে নিজেকে ফিট মনে করেন ঝটপট নিচের পয়েন্ট গুলো নিজের সাথে মিলিয়ে দেখুন? আপনি শারীরিকভাবে কতটা ফিট নিরবে খুধার কষ্ট সহ্য করতে পারেন খুধা পেলে কি চোখে অন্ধকার দেখেন সময় মত খাবার না পেলে কি মেজাজ খারাপ হয়ে যায়? খোদার কষ্ট সহ্য করতে পারা এক অতি মানবীয় গুণ বটে তবে একটু চেষ্টা করলে এই গুণটি আপনি আয়ত্ত করতে পারবেন সেক্ষেত্রে কার্যকর ট্রেনিং হতে পারে উপবাস। সপ্তাহে ১/২ দিন উপবাস শারীরিক ও মানসিকভাবে উজ্জীবিত রাখবে। বাড়াবে ফিজিক্যাল ফিটনেস।
দুই এক রাত নির্ঘুম কাটালে কি অসুস্থ হয়ে পড়েন?
সুস্বাস্থ্যের জন্য সকাল সকাল ঘুমিয়ে পড়া এবং ভোরে ঘুম থেকে উঠার কোন বিকল্প নেই। তবে যুক্তিসঙ্গত কারণে এক/দুই দিন এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটতেই পারে। যেমন পরীক্ষার সময় রাত জেগে পড়া বা পেশাগত বিশেষ কারণে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করা। এভাবেই দুই/এক রাত নির্ঘুম কাটালে যদি পরের দিনগুলোতে শরীর ম্যাচ ম্যাচ অনুভব করেন তাহলে আপনাকে ফিটনেস বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিতে হবে। এজন্য শরীরকে সব আবজ্বর বার ঘাতসহ হিসেবে তৈরি করা আবশ্যক। অর্থাৎ শারীরিক ফিটনেসকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। যখন হঠাৎ রাত জাগার মত অপ্রত্যাশিত ব্যাপার। শরীরে কোন নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। একটানা কতক্ষণ কাজ করতে পারেন শারীরিক ফিটনেস এর একটি গুরুত্বপূর্ণ মানদন্ড হলো একটানা বিরক্তি ও ক্লান্তিহীন ভাবে কাজ করে যাওয়ার ক্ষমতা। সফল মানুষদের লাইফস্টাইল পর্যালোচনা করলে দেখবেন তাদের কারোরই দৈনিক কোন কর্ম ঘণ্টা নয়টা-পাঁচটা ছিল না। এক্ষেত্রে বলা যায় বরং ঘরির কাটা থেকে এক কদম এগিয়েই থেকেছেন তারা সব সময় । ভারতের মিসাইলম্যান বিজ্ঞানী ও ১১ তম রাষ্ট্রপ্রধান এ পি জি আব্দুল কালামের কথা। দিনে না ঘুমিয়ে ১৮ ঘণ্টা লাগাতার কাজ করে যেতেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়ন কালে তার প্রজেক্ট পরিচালক তাকে হুমকি দিয়েছিলেন তিন দিনের মধ্যে প্রজেক্ট সম্পন্ন করতে না পারলে তার স্কলারশিপ বাতিল হবে। আব্দুল কালাম টানা তিন দিন নাওয়া খাওয়া ভুলে লেগে ছিলেন সেই প্রজেক্ট দাড় করার জন্য। দিনে শুধু এক ঘন্টা বিরতি নিয়েছেন অবশেষে তিনি সফল হয়েছিলেন স্কলারশিপ ও বহাল থেকেছে।
প্রায় সময় কি বা ক্লান্ত বা ঘুম ঘুম অনুভব করেন?
প্রায়ই ক্লান্তি বা ঘুমঘুম ভাব অনুভব করা শারীরিকভাবে আনফিট থাকার এক নম্বর লক্ষণ। আর এর অন্যতম কারণ রাতে গভীর ঘুমের অভাব ও ভুল খাদ্যাভ্যাস। রাতজেগে স্মার্ট ফোন টিভি কম্পিউটারের স্ক্রিনের চোখ রাখা আমাদের পর্যাপ্ত ঘুমাতে দেয় না কারণ এই ইলেকট্রনিক ডিভাইস গুলো থেকে বিচ্ছরিত নীল আলো, গভীর ঘুমের অন্তরায়। অন্যদিকে চিনি ও চিনি জাতীয় খাবার বেশি খেলে ঘুমক
ব্যাহত হয় কারণ চিনি জাতীয় খাবার মস্তিষ্কে আরেক্স জিন তৈরিতে বাধা দেয়। আরেক্স জিন আমাদের সজাগ থাকতে সাহায্য করে তাই বেশি বেশি চিনি গ্রহণ করলে সব সময় ঘুম ঘুম এবং ক্লান্তি ভাব অনুভূত হয়।
আপনি প্রায়ই কি অসুস্থ থাকেন?
বছরে ছয় মাসের জ্বর সর্দি-কাশি পেটের প্রায় ভোগা মানুষের সংখ্যা নেহাইতি কম না। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি দুর্বল হয় তাহলে খুব অল্পতেই অসুস্থ হয়ে পড়ার প্রবণতা থাকে। আর দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শারীরিক ফিটনেস এর অভাবের বড় নির্দেশক। বিশেষজ্ঞদের মতে বছরে যদি কারো তিনবার সর্দি লাগে আর তা ছেড়ে উঠে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি সময় নেই। তাহলে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশ দুর্বল। অন্যদিকে আমেরিকান একাডেমি অফ এলার্জিঅ্যাজমা এন্ড ইমিউনোলজির তথ্য অনুসারে কারো যদি বছরে দুইবার অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হয় কিংবা সামান্য ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ যদি গুরুতর আকার ধারণ করে তাহলে সে দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জনিত রোগে ভুগছে।
উপরোক্ত মানদণ্ড গুলোর সাথে আপনি আপনার অবস্থা মিলিয়ে নিয়েছেন এবারে পর্যালোচনা করুন আপনার ফিটনেস। যদি আপনি যথার্থই ফিট হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে অভিনন্দন আর যদি টা না হন তাহলেও ঘাবড়াবার কিছু নেই বিজ্ঞানসম্মত খাদ্য অভ্যাস স্বাস্থ্য পরিচর্যা, মেডিটেশন, ইয়োগা, দম চর্চার মাধ্যমে আপনি সহজেই বাড়ি নিতে পারেন আপনার শারীরিক ফিটনেস।
তথ্য সূত্র : কোয়ান্টাম মেথড
GIPHY App Key not set. Please check settings